কিন্তু তিনি কি জানতেন এটিই হবে তার

কিন্তু তিনি কি জানতেন এটিই হবে তার শেষ সিনেমা? একটা ওটিটিতে সিনেমা স্ক্রল করতে গিয়ে পেলাম ঘেটুপুত্র কমলা। আমার মনে পরে যায়, তিনি সিনেমার শ্যুটিং শুরু হবার পর একজন সাংবাদিকের কাছে অকপটে বলেছিলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সবার কাছে সাহায্য চাইবো, যে যা পারেন সাহায্য করুন সিনেমাটি বানানোর জন্য’। এতটাই অসহায় কেন হয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ? আমি জানি না। হুমায়ূন আহমেদের ভিজুয়ালের আলাদা ভাষা আছে। হোক সেটা সিনেমা কিংবা নাটক। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু শেষ সিনেমা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে ঘেটুপুত্র কমলা সিনেমাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

একমত হলো তার লেখার গভীরতা খানিকটা

হুমায়ূন আহমেদ নিয়ে তাত্ত্বিকরা যেসব সমালোচনা করেন তার মধ্যে সবাই একমত হলো তার লেখার গভীরতা খানিকটা কম। কথাটার বিভিন্ন দিকমাত্র আছে। আমরা আজ একটি দিক মাত্রা নিয়েই কথা বলি। সেটি হলো, হুমায়ূন আহমেদ সবসময়ই লেখার সাবলীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে সহজ টুলগুলো নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু সেগুলো এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত। মানে ধরুন, তিনি কোন গল্পকে মহামান্বিত করবার জন্য ম্যাজিক রিয়েলিজম বা জাদুবাস্তবতা নিয়ে আসেননি। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক ভাবে সচেতন থেকেও সহজ টুলগুলো নিয়ে কাজ করেছেন। যারা আমার হাবিজাবি কথাগুলো বুঝতে পারছেন না, তাদের জন্য একটি উদাহরণ দেই।

প্রভোকেটিভ অঁতর’ আবেল ফেরারার সিনেমা

হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত চরিত্র মিসির আলীর প্রথম বই ‘দেবী’, যেটি পরবর্তীতে ২০১৮ সালে অনম বিশ্বাসের নির্মানে সিনেমা হিসেবে মুক্তি পায়। সেখানে আমরা দেখি একটি শহরের মেয়ে কীভাবে পাশবিকতার স্বীকার হচ্ছে এবং সেখানের ভয়াবহতা তুলে ধরার জন্য তিনি হরর আবহ তৈরি করলেন। এই হরর টুলের পাশাপাশি তিনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এখানে ব্যবহার করেছেন, তা হলো- মূর্তি। কারণ এই অঞ্চলের সঙ্গে মূর্তি খুব পরিচিত এবং একে ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের মিথ। তিনি এখানে জম্বি টাইপের কিছু নিয়ে আসেননি, এতেই বোঝা যায় তার লেখায় সাবলীলতার খাতিরে সবকিছু সহজ লাগলেও তার গভীরতা মোটেও কম ছিলো না। মন্দের বিরুদ্ধে সবসময় জয় হবে সেটি যেমন দেখিয়েছেন, তেমনি তুলে এনেছেন ব্যক্তি-সমাজের দ্বন্দ্ব এবং বিভিন্ন টানাপোড়েন।

ঘেটুপুত্র কমলা সিনেমাটি তার এক অনন্য উদাহরণ। চলচ্চিত্রটির সময়কাল ব্রিটিশ আমল। প্রায় দেড়শ বছর আগের এক গ্রামীণ পরিবেশের কথা খুঁজে পাওয়া যায় চলচ্চিত্রটিতে। ব্রিটিশ শাসনাধীন (বর্তমান বাংলাদেশের) হবিগঞ্জ জেলার জলসুখা গ্রামের পটভূমিতে চলচ্চিত্রটির কাহিনি চিত্রিত। সে সময় জলসুখা গ্রামের এক বৈষ্ণব আখড়ায় ঘেটুগান নামে নতুন গ্রামীণ সঙ্গীতধারা সৃষ্টি হয়েছিল। নতুন সেই সঙ্গীত ধারাতে মেয়েদের পোশাক পরে কিছু সুদর্শন সুন্দর মুখের কিশোরদের নাচগান করার রীতি চালু হয়। এই কিশোরদের আঞ্চলিক ভাষাতে ঘেটু নামে ডাকা হতো। ঘাটু নামের নব এই সঙ্গীত ধারাতে গান প্রচলিত সুরে কীর্তন করা হলেও উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রভাব বেশ লক্ষণীয় ছিল।

জনপ্রিয় নতুন সঙ্গীতরীতিতে নারী

গ্রাম্য অঞ্চলের অতি জনপ্রিয় নতুন সঙ্গীতরীতিতে নারী বেশধারী কিশোরদের উপস্থিতির কারণেই এর মধ্যে অশ্লীলতা ঢুকে পড়ে। শিশুদের প্রতি যৌনসংসর্গে আগ্রহী বিত্তবানরা বিশেষ করে জোতদার প্রমুখ এইসব কিশোরকে যৌনসঙ্গী হিসেবে পাবার জন্যে লালায়িত হতে শুরু করে। একসময় সামাজিকভাবে বিষয়টা স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের জমিদার ও বিত্তবান শৌখিন মানুষরা বর্ষাকালে জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্রদের নিজের কাছে রাখবেন এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। শিশুদের প্রতি যৌনসংসর্গে আগ্রহী বিত্তবানদের স্ত্রীরা ঘেটুপুত্রদের দেখতেন সতীন হিসেবে।

খুবই গভীর একটি বিষয়কে সামাজিক দৃষ্টিতে দেখানোর মত কঠিন কাজটি করতে হুমায়ূন আহমেদ এখানে বেশ কিছু এলিমেন্টস নিয়ে এসেছেন। যেগুলো খুঁটিনাটি আমার মত বেশিরভাগ সাধারণ দর্শকেরই চোখে পরে না। এমনকি সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এই গল্পের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিশুদের সঙ্গে যৌন মনোভাব হলেও সিনেমায় এটিকে এত সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা ভাবলে অবাক হতে হয়। সেই বৃটিশ আমলের সময়কে ধরতে বিভিন্ন গান ও নাচের ব্যবহার করা হয়েছে। নৃত্যগুলোর পরিচালনা করেছিলেন মেহের আফরোজ শাওন।

এই চলচিত্রের একটি গান অনেকেরই পরিচিত, তা হলো- ‘আমার যমুনার জল দেখতে কালো….’। এই গানটির লিরিক্সের দিকে খেয়াল করলেও আপনি বুঝতে পারবেন তার পরতে পরতে কীভাবে সেই সময়টাকে তুলে ধরে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। সিনেমাটি বানানোর জন্য যেখানে হুমায়ূন হাত পাতবেন ভেবেছিলেন সেটি পাঁচটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার লাভ করে। এবং ৮৫ তম অস্কারে ‘সেরা বিদেশী ভাষার চলচিত্র’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কমিটি এই সিনেমাটিকে মনোনয়ন দেয়। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে স্ক্রল করতে করতে মনে পরে যায়, হুমায়ূন আহমেদ ২০০৪ সালে ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমার মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ আবারো মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা নিয়ে হাজির হন।

এমনই একদল আশ্রয় সন্ধানীর পলায়নের

১৯৭১ সালের মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। সারা দেশে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে বেড়াতে থাকে। এমনই একদল আশ্রয় সন্ধানীর পলায়নের কাহিনী নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন ধর্মের কিছু আতংকিত মানুষের আলাদা গল্প নিয়ে সিনেমার মূল গল্প। রিয়াজ, শিমূল খান, শাওন, তানিয়া আহমেদ, স্বাধীন খসরু, ডা.এজাজ, ফারুক আহমেদ সহ আরো অনেকে এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাতে বাড়তি আকর্ষন হিসেবে যুক্ত হয় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কিংবদন্তি হুমায়ূন ফরিদীর অভিনয়। অস্কারে বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগের প্রতিযোগিতায় সে বছর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্যামল ছায়া’।

শিল্পমান বিচারে ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিস্প্রভ বলা চলে। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটির পুরো চিত্রায়ন হয়েছে নুহাশ পল্লীতে। একজন ধনাঢ্য বয়স্ক ব্যক্তি হঠাৎ করে তার আপনজনদের কাছে পেতে চান। কিন্তু বাস্তবতার কারনে সব সন্তানকে তাদের পরিবার সহ একসাথে করাটা তার জন্য হয়ে উঠে কঠিন কাজ। তাই সবাইকে তার মৃত্যুসংবাদ দিয়ে একত্রিত করা হয়। এরপরেই সেই বাড়িতে ঘটতে থাকে একের পর এক মজার মজার ঘটনা। কমেডিধর্মী এই সিনেমাতে অভিনয় করেন রহমত আলী, দিতি, তানিয়া আহমেদ, রুপক, মিঠু, ডা. এজাজ, ফারুক আহমেদ, শবনম পারভীন প্রমুখ।

২০০৮ সালে হুমায়ূন আহমেদের নন্দিত উপন্যাস ‘আমার আছে জল’ অবলম্বনে নির্মিত হয় সিনেমা ‘আমার আছে জল’। এ সিনেমার কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য, গীতরচনা, শিল্পনির্দেশনা ও পরিচালনা সব দায়িত্ব বলতে গেলে একাই সামলেছেন হুমায়ূন আহমেদ নিজেই। সিলেটের মনোরম লোকেশনে শ্যুটিং করা হয়েছে। একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা তার পরিবার নিয়ে ছুটিতে যান এবং সেখানে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়েই সিনেমার গল্প। সিনেমায় অভিনয় করেন বিদ্যা সিনহা মিম, ফেরদৌস, জাহিদ হাসান, শাওন, পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, সালেহ আহমেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, ডা.এজাজ, মুনিরা মিঠু, মাজনুন মিজান, পুতুল, রুদ্র, ওয়াফা প্রমুখ।

 দু’টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে

২০০৮ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমা ‘আমার আছে জল’ দু’টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। এই সিনেমার মধ্য দিয়েই লাক্স সুন্দরী বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। সিনেমায় হাবিব ওয়াহিদ এবং এস আই টুটুলের দুটি গান দারুন জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ‘যদি ডেকে বলি’ এবং ‘নদীর নাম ময়ুরাক্ষী’ শিরোনামের গানদুটি এখনো সমান জনপ্রিয়। চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে ‘আগুনের পরশমনি’র মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদ যে সফল যাত্রা শুরু করেন তা শেষ হয় তার অষ্টম চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র মধ্য দিয়ে। চলচ্চিত্রটি তিনি নির্মান করে যেতে পেরেছিলেন, কিন্তু মুক্তি দিয়ে যেতে পারেন নি।

চাতুর্জের সাথে অনুমেয় ব্যাপারগুলো এড়িয়ে

তার মৃত্যুর পরে ২০১২ সালে ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। ১৯৯৬ সালে হুমায়ূন আহমেদের ছোটগল্প গ্রন্থে ছাপা হয় ‘একজন শৌখিনদার মানুষ’। সেই গল্প অবলম্বনেই এই সিনেমা। ব্রিটিশ শাসনের সময়ে হাওর অঞ্চলের জমিদার ও বিত্তবান শৌখিন মানুষরা বর্ষাকালে জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্রদের নিজের কাছে রাখবেন এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। এবং তখন শিশুদের প্রতি যৌনসংসর্গে আগ্রহী হতেন। হাওরে বর্ষাকালের সময়টাতে আটকে পড়া একটি গ্রামের জমিদার, তার ঘেটু গানের প্রতি আগ্রহ, বিকৃত যৌন রুচি এবং ওই সময়ে গানের দলগুলি তাদের অভাব মেটানোর জন্য যেসব উপায়ে রোজগার করার প্রয়াস করতো সেসব নিয়েই ‘ঘেটুপুত্র কমলা’।

ঘেটুপুত্র কমলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী মামুন। এছাড়া আরো অভিনয় করেন তারিক আনাম খান, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, তমালিকা কর্মকার, আগুন, প্রান, শামীমা নাজনীন সহ আরো অনেকে। সিনেমায় ব্যবহৃত ঘেটু গান বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছিলো। ফজলুর রহমান বাবু, প্রিয়ন্তী, এবং শফি মন্ডলের গাওয়া ‘শুয়া উড়িলো’ ‘বাজে বংশী’ ‘আমার যমুনার জল দেখতে কালো’ ‘সাবান আইনা’ গানগুলি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ওই সময় আমেরিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ দিনের জন্য বাংলাদেশে এসে কাছের কিছু বন্ধুদের নিয়ে সিনেমাটি দেখেন হুমায়ূন আহমেদ।

সিনেমার মহরতে হুমায়ূন আহমেদ ঘোষণা

৮৫তম অস্কার আসরে বাংলাদেশ থেকে ‘বিদেশী ভাষায় সেরা চলচ্চিত্র’হিসেবে পাঠানো হয় ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। সিনেমার মহরতে হুমায়ূন আহমেদ ঘোষণা দিয়েছিলেন, এটি হবে তার শেষ সিনেমা। শেষ পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের ঘোষণাই সত্য হয়। তাঁর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দারুচিনি দ্বীপ, নন্দিত নরকে, দূরত্ব, আবদার, নিরন্তর, সাজঘর ইত্যাদি। হুমায়ূন আহমেদ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে জাদুকরী লেখনী দিয়ে পাঠকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। খুব সাদাসিধে অথচ আবেদনময়, এমনভাবেই প্রতিটি চরিত্র তৈরী করতেন তিনি। বিনোদনের সব মাধ্যমেই অনন্য দক্ষতার সিঁড়ি বেয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি।

সাধারণ মানুষের জীবনের গল্পগুলো যেমন অসাধারণ হয়ে উঠেছিল তার লেখনীতে তেমনি তার পরিচালনায় একইরকমভাবে সেলুলয়েডের সেই চরিত্রগুলি আমাদের জীবন এবং সমাজের বাস্তবতায় মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলো। আজ ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু লেখক বা নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ অমর। তার উপন্যাসের কালজয়ী চরিত্রগুলো যেমন অম্লানভাবে টিকে আছে তেমনি চলচ্চিত্র মাধ্যমেও তার সিনেমাগুলি এখনো আমাদের আনন্দ দেয়, কখনো বা কষ্ট দেয়, আবার মুখে হাসি ফোটায়। নিজের কালজয়ী এসব সৃষ্টিকর্মের মাঝেই তিনি রয়ে যাবেন অনন্তকাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *