আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ উসমানিয়া বংশধরেরা বর্তমানে কোথায় আছে? সালতানাতে ওসমানিয়া সমাপ্ত হওয়ার পর তাদের সাথে কি কি ঘটেছিল ? কেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল ? তাদের পোস্ট টিতে আলোচনা করব ইণসাআল্লাহ।
কি হয়েছে আরতুগ্রুলের বংশধরদের সাতে জানলে চুখে পানি আসবে
ঘটনাটি আজ থেকে প্রায়১০০ বছর আগের। পহেলা নভেম্বর ৯২২ এটিকে মুসলিম উম্মার ইতিহাসের একটি কালো দিন বলে বিবেচনা করা হয়। কারণ এই দিনই অফিশিয়ালি সালতানাতে ওসমানিয়া কে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এই দিনে সুলতানি শাসন কে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকে শুরু হয় মোস্তফা কামাল পাশার শাসনামল। মূলত সুলতান ষষ্ঠ মোহাম্মদকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একজন অপছন্দনীয় শাসক হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরা হয়। আর পরবর্তীতে এরই জের ধরে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১৭ দিন পর সুলতান মোহাম্মদ একটি জাহাজে করে মাল্টায় চলে যায়।
আরতুগ্রুল গাজী অটোমান সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্মাতা
ফটোক থেকে তিনি ইটালিতে চলে যান । নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু তিনি সেখানেই কাটিয়েছিলেন। সুলতান মোহাম্মদ হাজার ৯২৬ সালের ১৬ ই মে ইতালিতে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তাকে দাফন করা হয়েছিল সিরিয়ার দামেস্ক শহর এর সুলতান সেলিম মসজিদ পাশে।
যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন তিনি ওসমানিয়া বংশের প্রধান হিসেবে ছিলেন । তবে তার মৃত্যুর পর থেকেই নুতুন সাম্রাজ্যের তৈরি হয় এবং তার সাম্রাজ্যে লাঞ্চিত হতে শুরু করে । ওসমানিয়া বংশধররা মাটি মিশে যায়। তারা বিগত ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে শাসন করেছে ।
সুলতানের মৃত্যুর পর সেই তুরস্ক থেকে বিতাড়িত করা হয় উসমানিয়া বংশধরদের । সে সময় কোথাও একবিন্দু জায়গা ছিল না ওসমানিয়া বংশধরদের । থাকার জন্য রাতারাতি নিজ ভূমিতে বিতাড়িত হয়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়ে ওসমানিয়া বংশধররা ।
সর্বমোট ১২৬ জন স্থানীয় বংশধরদের তুরস্ক থেকে বিতাড়িত করা হয় ।এর মাঝে শাহজাদা ছিল শাহজাদী ছিল।
ছিল ছোট বাচ্চারা ।আবার তাদের সাথে এমন কিছু বিশ্বস্ত চাকুর ছিল, যারা কখনোই তাদের মালিকের সঙ্গ ত্যাগ করেনি ।
আরতুগ্রুল গাজী যেভাবে বিশ্বের বুকে মুসলিম বীর হয়ে ওঠে
সে চাকর গুলো ওসমানিয়া বংশধরদের৭৭৬ এ দেশ ত্যাগ করেছিল । এমনকি ওসমানিয়া বংশের যারা জামাই ছিলেন তাদেরকে তুরস্ক থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল । ওসমানিয়া বংশধরদের তুরস্ক থেকে বিতাড়িত করার আগেই তাদের সকলকে এমন একটি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল ,যার মাঝে পৃথিবীর সব দেশের ভিসা লাগানো ছিল।
অর্থাৎ তারা পৃথিবীর যেকোন দেশে ভ্রমণের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত ছিলেন। অতঃপর তারা ঠিক করলেন যে মিশরে পাড়ি জমাবেন । কেননা এক সময় তাদের শাসনাধীন ছিল কিন্তু সমস্যা বাধলো আরেক জায়গায় তৎকালীন তুর্কি শাসক এবং ব্রিটিশরা কখনোই চাইতোনা ওসমানিয়া বংশধররা মিশরে পাড়ি জমান।
- রোজার রেখে কি স্ত্রী সাথে সহবাস করা যাবে? জেনে নিন
- দশটি শিক্ষা আপনার জীবনকে একে বারে পাল্টে দিবে
- গ্রামবাসীর কাছে এই শিশু যেন আল্লাহর রহমত
আর তাই তাদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও তার আরামে সরে যেতে পারল না । এরপর তারা সিরিয়ার যেতে চাইলেন কিন্তু তুর্কি শাসক তাদেরকে সেখানে যেতে দিলেন না । কারণ সামন্তী তুরস্কের অনেক আছে।যদি তারা সেখানে গিয়ে তাদের পক্ষে সমর্তন তৈ রি করে । তাহলে সেটা তাদের জন্য মারাত্তক হয়ে উটবে।
এরপর আর কোন উপায় না পেয়ে ওসমানিয়া বংশধররা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলেন ।এক ভাগ চলে গেলেন লেবাননে। আরেক ভাগ খলিফা আব্দুল মাজীদ এর নেতৃত্বে পাড়ি জমালেন ফ্রান্সে। ওই সময় টা উসমানিয়া বংশধরদের জন্য অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনা ছিল।
সালতানাতের পতনের জন্যে উদারতা মূল
সালতানাতের পতনের জন্য আমরা টিভি সিরিয়ালের দেখে থাকি। সেই দৃশ্য মানুষগুলো নিজ চোখে দেখেছিলেন ওসমানিয়া বংশধরদের তুরস্ক থেকে বিতাড়িত করার আগেই তাদের এত কম সময় দেওয়া হয়েছিল। যে তারা নিজেদের দামী দামী প্রয়োজনীয় সব জিনিস এমনকি দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস গুলো ফেলে এসেছিলেন শাহী মহলে।
আসলে ওসমানিয়া বংশের শাসক এরা সবসময় সুশাসনের চর্চা করতেন। আর তাই তারা কখনও কল্পনাও করতে পারেননি যে তাদের সাম্রাজ্যের মানুষরা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। কিংবা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। কিন্তু তাদের এই ধারণা পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে ।নিউ সাম্রাজ্যের মানুষ ওসমানিয়া বংশধরদের সাথে এমন বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল যে ভূমি তুরস্ক তাদের কাছে ভিনদেশের মত অপরিচিত হয়ে গিয়েছিল।
৯২৬ সালে সুলতানের মৃত্যুর পর একটি নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। সে আইন অনুযায়ী ওসমানিয়া বংশের প্রধান তিনি হবেন যারা সবচেয়ে বেশি পরিচিত। আজ পর্যন্ত এই আইনটি অপরিবর্তিত আছে ।এবার চলুন কথা বলা যাক ওসমানিয়া বংশধরদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে ।
বর্তমানে উসমানিয়া বংশের প্রধানের নাম হল হারুন ওসমান। ৮৯ বছর বয়সী হাজার ৯৩২সালের২২জানুয়ারির সিরিয়ার দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও সালতানাতের পতনের দুই দশক অতিবাহিত হওয়ার পর হাজার ৯৪৪ সালে ওসমানিয়া বংশের নারীদের জন্য এবং তার ৩০ বছর পর ১৯৭৪ সালে পুরুষদের জন্য তুরস্কে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয় ।
আরতুগ্রুল গাজী উসমানি সাম্রাজ্যের ভবিষ্যত নির্মাতা
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা তুলে দিলেও ওসমানিয়া বংশধরেরা আর কখনো আগ্রহী হয়নি তুরস্কে ফিরে যাওয়া। যেত তারা ছেড়ে এসেছিল । তুরস্কের মাঝে রাতদিন তফাৎ রয়েছে যে তুরস্ক একটা সময়ে তাদের কাছে ছিল একটা ফুলের বাগানের মত ।
সে তাদের চোখে হয়ে উঠেছিল একটা বিষাক্ত বাগান । তাই ওসমানিয়া বংশধরেরা নিষেধাজ্ঞা না থাকা সত্ত্বেও স্মৃতি হাতরে বাঁচার বৃথা চেষ্টা না করি সবসময় তুরস্ক থেকে নিজেদের দূরে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের কে ভাল রাখুক এই দোয়া করি আমরা সব সময়।
সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ