ক্যান্টোনিজ সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন

সেসময়টা ছিল সম্ভবত ক্যান্টোনিজ সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়। হংকংয়ের মেইনস্ট্রিম সিনেমা দখল করে নিয়েছিল ম্যান্দারিন ভাষা। খুব কম সংখ্যক ক্যান্টোনিজ সিনেমা সেসময় নির্মাণ হতো, যেটুকু হতো সেগুলো ছিল নিম্নশ্রেণীর সিনেমা।১৯৭২ সালটা ছিল আরো জঘন্য। সেবছর কোন ক্যান্টোনিজ সিনেমা নির্মাণ হয়নি হংকংয়ে।

তাহলে কী ক্যান্টোনিজ সিনেমার ইতিহাস শেষ? তখন সোশ্যাল মিডিয়া থাকলে এটা নিয়ে নিশ্চয়ই অনেক আলাপচারিতা হতো। ১৯৭৩ সালে শুধু হংকং নয়, পুরো বিশ্বের সেনসেশান ছিল হংকং-আমেরিকার যৌথ প্রযোজিত সিনেমা Enter the Dragon কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই ফ্যামিলি-কমেডি ক্যান্টোনিজ সিনেমা বনে যায় সেবছরের সবচেয়ে আয় করা হংকং সিনেমা।

এই সিনেমার পরের বছরেই ক্যান্টোনিজ

আর সেখান থেকে পুনর্জন্ম নেয় ক্যান্টোনিজ সিনেমা। এই সিনেমার পরের বছরেই ক্যান্টোনিজ কমেডিতে অধুনিকায়ন এনে মার্কেট দখল করে নেন হাই ব্রাদার্স এবং সেখান থেকে পরবর্তী কয়েকবছরের জন্য ক্যান্টোনিজ সিনেমা হয়ে যায় পুরো বিশ্বের আলোচিত এক ইন্ডাস্ট্রি আর এগুলো সবকিছুর শুরুটা ছিল এই সিনেমার মাধ্যমে। চর উয়েন পরিচালিত এই সিনেমা ১৯৬৩ সালের একই নামের এক সিনেমার রিমেক। একটি কলনি টাইপ জায়গায় ৭২ জন ভাড়া থাকেন।

ক্যান্টোনিজ সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন

৭২ মানুষ ৭২ রকমের তবে তাদের বাড়িওয়ালা হচ্ছে অনেক কঠোর, ঠিকমতো যেমন, অনেকটা ওরকমই।পুরো সিনেমা কিছুকিছু ক্ষুদ্র ঘটনা এবং ক্রমাগত ডায়লগ ডেলিভারির উপর দিয়ে চলেছে। শুধুমাত্র উপভোগ করতে চাইলে এই সিনেমা সাব দিয়ে উপভোগ করা কঠিন। হয়ত যারা ক্যান্টোনিজ সিনেমায় পারদর্শী তারা এই সিনেমার পূর্ণ আনন্দ নিতে পারবেন। আমার এই সিনেমা দেখার মূল কারণ এটা উপভোগ করা ছিল না।

আমি জানতাম যে এটা আমার আহামরি ভালো লাগবে না তবে ক্যান্টোনিজ সিনেমার একজন রেগুলার দর্শক হিসেবে এই সিনেমা না দেখলে ক্যান্টোনিজ ইতিহাসটা আমার জন্য অপূর্ণ থেকে যাবে তাই দেখা। তবে সিনেমা জুড়ে অসংখ্য পরিচিত মুখদের দেখে ভালো লেগেছে।বাকিটা আপনারা দেখবেন কিনা তা আপনাদের সিদ্ধান্ত তবে ক্যান্টোনিজ সিনেমার একদম হার্ডকোর ফ্যান না হলে এটা ভালো লাগা তো দূরে থাক, শেষ করতে পারার সম্ভাবনাও ক্ষীন।

বিফোর ট্রিলজির মত ছেলেমেয়ের প্রেম সম্পর্কের সাইফাই সংস্করণ বলা যায়। আবার অতটা জটিল কিছুও না। প্যারালাল ইউনিভার্সে ওদের জীবনের বিভিন্ন স্তরকে দেখানো হয়েছে, কোথাও তাদের প্রথম দেখা হচ্ছে, কোথাও তারা বিবাহিত, কোথাও তাদের বিচ্ছেদের অনেকদিন পর পুনরায় দেখা হচ্ছে। প্রায় ৫-৬টা সময়, সবখানেই ক্রমান্বয়ে সময়কে দেখানো, নন-লিনিয়ার নয়, যাতে ফলো করতে সমস্যা না হয়।

Comet চমৎকার চয়েজ

চিত্রনাট্যের এই দিকটাই মুভিটাকে সাধারণ রোম্যান্টিক ফিল্ম থেকে কিছুটা ভালো জায়গায় নিয়ে গেছে, না হলে প্রেমের গল্প তো সবই এক। মূল চরিত্রে ২জন ভালোই অভিনয় করেছে, তবে জাস্টিন লাং বেশি ভালো, মেয়েটার অভিনয় অতটা ভালো লাগেনি, বা হয়তো তার চরিত্রটা সবখানেই ছেলেটার চেয়ে একটু পিছিয়ে।

গল্পে কোথায় কী হচ্ছে বলে দিলে স্পয়লার হয়ে যাবে, তবে মূল ম্যাসেজটায় এই জীবনে না পেলে পরের জীবনে পাবো – ব্যাপারটা সুন্দরভাবে উঠে এসেছে।ওই ধরণের মুভি, যেখানে শুরু থেকেই প্রচুর স্ক্রিনশট, কোলাজ তৈরি করার মত সংলাপ পাওয়া যায়। বিফোর ট্রিলজির মতোই প্রচুর বিশদ ভাবনার খোরাক থাকে, তবে সবই প্রেমকেন্দ্রিক। বিফোর ট্রিলজির মত জগত সংসার নিয়ে দর্শনতত্ত্ব কপচানো নেই, সেদিক থেকে নিয়মিত রোম্যান্টিক মুভিখোরদের কাছে একঘেয়ে লাগতে পারে।

তবে ফর আ চেঞ্জ রিলেশানশীপের বা ডেইট মুভি দেখতে চাইলে Comet চমৎকার চয়েজ, আমি বিভিন্ন কারণে এক বসায় দেখতে পারিনি, তবে সিনেমাটোগ্রাফি, আবহ সঙ্গিত মিলিয়ে খুবই আরামদায়ক একটা অভিজ্ঞতা। লেখনী কোথাও কোথাও বেশি বেশি লাগে, কিছু ওয়ান-লাইনার আগে অন্য কোথাও ব্যবহার করা হয়েছে মনে হয়। তারপরেও একটা অনিশ্চয়তা, একটা মিস্টিসিজম সবসময়েই আগ্রহ ধরে রাখে, আর আমার অ্যারন সর্কিনের মত র‍্যাপিড ডায়লগ প্লে ভালো লাগে।

রটেন টোম্যাটোজে রেটিং (৪৭%, ৫২%) ভালো না, তবে লেটারবক্সে রেটীং ভালো। আমিও গ্রেড খারাপ দেবো না। যারা Before Sunrise, One day, এর মত রিয়েলিস্টিক কনভার্সেশান ভিত্তিক থট- প্রোভোকিং রোম্যান্টিক মুভি পছন্দ করেন তাদের জন্য। যারা প্লট কেন্দ্রিক ফিল্ম পছন্দ করেন, তাদের জন্য নয়Nomadland এটি এমন একটি মুভি যা আমাকে অসংখ্যবার মুখে হাসি এনে দিয়েছে – চোখে জল এনে দিয়েছে।

খুবই আরামদায়ক একটা অভিজ্ঞতা

I believe আমি মুভিটির মধ্যে ঢুকে যেতে পেরেছিলাম। আমার দেখা সেরা মুভি গুলোর একটি হয়ে গিয়েছে এটি। Somehow আমি মুভিটির সম্পর্কে শুনেছিলাম এটি অনেক ভালো মুভি। আমি ইচ্ছেকৃত ভাবেই চমৎকার এই মুভিটির পরিচালকের নাম জানতে চাই না। আমি এটি স্কিপ করেছি। শুধু এটি জেনেই তৃপ্ত থাকতে চাই যে, মুভিটির পরিচালকের চমৎকার একটি মন রয়েছে।

এটি না হলে এমন একটি কাজ করা অসম্ভব। আপনি মুভিটি থেকে এমন কিছু পাবেন যা হয়তো কোনদিন খুজে পেতেন না। আর Frances McDormand সে অসাধারণ একটি মেয়ে, আই লাভ হার। সিনেমা প্রেমীদের এটা দেখা উচিৎ।আমি এই মুভিকে ১০/১০ দিয়েছি।আটলান্টিস কোন গল্প ভিত্তিক মুভি নয়। বরং এখানে যুদ্ধ পরবর্তী একটা দেশের অবস্থা কেমন হয় কিংবা হতে পারে সেটাই দেখানো হয়েছে।

মুভিতে যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার একবছর পর ২০২৫ সালের ইউক্রেন কে উপস্থাপন করা হয়েছে। রূপক অর্থে পরিচালক বুঝিয়ে দিয়েছেন শুধু ইউক্রেন নয় যে কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের অবস্থা এমনই হবে এর ব্যতিক্রম নয়। যুদ্ধ মানে যুদ্ধ। এখানে কে জয়ী হল সেটা সম্পূর্ণ অর্থহীন। কেননা দিন শেষে ভুক্তভোগী হতে হয় মানুষদের। সেটা যে দেশের মানুষ হোক না কেন।

যেমন – যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফেরা সৈন্যরা হাজার চেষ্টা করেও Post Traumatic Stress Disorder থেকে বেরিয়ে আসতে পারার সংখ্যাটা খুব নগন্য। আর এই PTSD একজন সৈন্য কে কেমন ভয়াবহতার দিকে ধাবিত করতে পারে সেটা ডিরেক্টর একটা ভয়ংকর দৃশ্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। যা দেখে যে কারো গা শিউরে উঠবে!যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলোকে ক্যাপিটালিস্ট কান্ট্রি কিভাবে ম্যানিপুলেট করে সেটাও এই মুভিতে উঠে এসেছে।

করে দেয়না, তারা শুধু কম্পিটিশন

একটা ডায়ালগ ছিল এমন – আমেরিকা তাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয়না, তারা শুধু কম্পিটিশন ইলিমিনেট করে। স্পষ্টত ডার্ক সাইড অফ ক্যাপিটালিজম কে তুলে ধরা হয়েছে। যুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া বেকারত্ব সমস্যা, ওয়াটার পলিউশন, ক্লাইমেট চেঞ্জ ইত্যাদি বিষয় এই মুভিতে সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে। মুভিটা মূলত রাশিয়া – ইউক্রেনের মধ্যে সংঘটিত হওয়া যুদ্ধ কে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হয়েছে।

দেখানো হয় রাশিয়া এত বেশি ল্যান্ড মাইন ইউক্রেনে স্থাপন করেছে যা কিনা সরিয়ে ফেলতেও ১৫-২০ বছর লেগে যাবে। অর্থাৎ যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশ আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়াটা একপ্রকার অসম্ভব প্রায়!কোন প্রফেশনাল অভিনেতা – অভিনেত্রী এখানে অভিনয় করেনি। বরং যুদ্ধ ফেরত আসল সৈনিক এবং এনজিও তে কাজ করে এমন একজন ভলান্টিয়ার কে কাস্ট করা হয়েছে।

তাই লিড রোলের ডেপ্থ ক্যারেক্টার স্টাডি এক্সপেক্ট করাটা বোকামি হবে।মুভির শুরু এবং শেষ যে ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করেছে তা মনে হয় না খুব একটা সহজে মাইন্ড থেকে রিমুভ হবে। কি চমৎকার নাইট ভিশন ক্যামেরার ব্যবহার এবং সেটার ইফেক্ট! এক কথায় অসাধারণ লেগেছে। এই মুভির সিনেমাটোগ্রাফি কে টেন আউট অফ টেন দিতে একটুও কার্পণ্য করবো না।

লম্বা শট, ক্লোজ শট এবং সাইলেন্ট শটগুলো দারুণ ছিল। আইএমডিবি মতে এই মুভিটি তৈরি করতে টোটাল ২৮ টা শট নিতে হয়েছে। মুভির শেষটা খুব ভালো ছিল। ভিতরের আত্মা যতই বিধ্বস্ত হোক না কেন মানুষ তার নিজের মত করে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যবোধ খুঁজে নিতে পারে। দরকার শুধু একটু আশার। এমন আশা যেটা অন্ততপক্ষে বেঁচে থাকতে উদ্বুদ্ধ করবে। সব শেষে বলব এই ফিল্মটা এমন একটা ফিল্ম যেখানে উপভোগ্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *