টিসিবির পণ্য বিক্রি রাজশাহীতে, জনসাধারণের বেহাল অবস্থা

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির পণ্য সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জনসাধারণের মাঝে দুপুর ১২টার পর থেকে পণ্যগুলো দেওয়া হবে। কিন্তু টিসিবির কর্তৃপক্ষ থেকে জনসাধারণকে নির্দিষ্ট কোন টাইম ঠিক করে দেওয়া হয়নি যার কারণে তবে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তাই তাঁরা কেউ সকাল ছয়টা, কেউ নয়টা থেকে লাইনে অপেক্ষায় আছেন।

নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দাশপুর এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের হোসেন (১২) তার বাবা জাকির হোসেনের কার্ড নিয়ে সকাল নয়টা থেকে অপেক্ষা করছে।। ষষ্ঠ শ্রেণির এ শিক্ষার্থী দুপুর ১২টার দিকে আমাদেরকে জানিয়েছে, ‘তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ি কখন আসবে জানি না।’

রাজশাহীর  লাইনে দাঁড়ানো  আরেক ভোক্তা মো. শামীম হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, যে সময়টা অপচয় হচ্ছে, এর মূল্য নেই? সকালের দিকে পণ্যগুলো দিয়ে দিলে লোকজন অন্য কাজ করতে পারত। এটা আর সাশ্রয়ী পণ্য হলো কী করে।

তীব্র রোদের কারণে অনেকেই লাইন ছেড়ে রাস্তার পাশে আমগাছতলায় আশ্রয় নিয়েছেন। নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দাশপুকুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লোকজন বাজারের ব্যাগের ওপর ইট-পাথর রেখে লাইনের স্থান দখল করেছেন। ছোট্ট একটি শামিয়ানাও টাঙানো হয়েছে। তাদের এই অপেক্ষার অবসান শেষ হবে কি? এমনটাই জানতে চেয়েছেন ভোক্তারা।

মো. কামাল হোসেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তিনি বলেন, টিসিবির ট্রাক গোডাউন থেকে পণ্য নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে আসার কথা। কার্ড নিয়ে দুপুর ১২টার আসতে বলেছেন তাঁরা। অনেকে সকালেই এসে গেছেন। প্রথম দিন পণ্য দিতে একটু দেরিও হতে পারে। তিনি আরও জানান এই ওয়ার্ডে আজ রোববার ৮৪৪ জনের কাছে পণ্য বিক্রি হবে।

মেসার্স উপমা এন্টারপ্রাইজ এই ওয়ার্ডে পণ্য বিক্রির দায়িত্বদেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোস্তাক আহমেদ বলেন, তাঁরা সকাল থেকে পণ্যের জন্য ট্রাক নিয়ে বসে আছেন। আগে উপজেলার ট্রাকগুলো ভর্তি করা হচ্ছে। বেলা দেড়টা নাগাদ তাঁরা পণ্য পেতে পারেন।

বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ এদিকে রোববার সকাল ১০টায় নগরের মহিষবাথান কলোনি মাঠে টিসিবির পণ্য বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল ও আরও অনেকে।

আজ টিসিবির এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে জেলা  সিটি কর্পোরেশনের ৭টি পয়েন্টসহ মোট ২৭টি পয়েন্টে। ২০ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে চিনি, ডাল ও তেল বিক্রি করা হবে। ৩ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে এসব পণ্যের সঙ্গে ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর যুক্ত করে বিক্রি করা হবে। রাজশাহীতে সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৫ হাজারসহ উপজেলা ও পৌরসভার এলাকার মোট ২ লাখ মানুষ এই সেবা পাচ্ছেন।

টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবার প্রথম পর্যায়ে ২ কেজি চিনি, ২ কেজি ডাল ও ২ লিটার তেল কিনতে পারছেন। দাম পড়ছে প্রতি লিটার তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা ও প্রতি কেজি মসুরের ডাল ৬৫ টাকা। মোট খরচ হচ্ছে ৪৬০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *