ফ্যাশন হাউজ গুচ্চি’র সাবেক প্রধান মরিজিও গুচ্চি আর প্যাট্রিশিয়া’র ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত নিয়ে রিডলি স্কটের নতুন ছবি মরিজিও গুচ্চির দাদা গুচ্চিও গুচ্চি ছিলেন বিখ্যাত ফ্যাশন মোগল। তার হাত ধরেই ব্যবসার উত্থান, পরবর্তিতে ছেলে অভিনেতা রোডোলফ ও পরে নাতি মরিজিও ব্যবসার হাল ধরেন। মরিজিও’র ব্যক্তিগত জীবন ছিল বেশ ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ।
পরিবার ও ব্যবসা সামাল দেওয়ার কাহিনী নিয়েই রিডলি স্কটের এই ছবি। বেশ তারকাবহুল ছবি। মরিজিও চরিত্রে অ্যাডাম ড্রাইভার, তার স্ত্রী প্যাট্রিশিয়া চরিত্রে লেডি গাগা। এছাড়া ছবিতে আরও আছেন জেরেমি আয়রনস, জ্যারেড লেটো, সালমা হায়েক আর এক ও অদ্বিতীয় আল পাচিনো।
পরিচালক হসিয়ানের এই ফিল্ম খুঁজে পেতে
নভেম্বরে মুক্তি পাচ্ছে।টাইম পিরিয়ড, তিনটা গল্প, একই নায়ক-নায়িকা।কানে আরেকবার মনোনীত পরিচালক হসিয়ানের এই ফিল্ম খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছিল বৈকি। সাবটাইটেল মিলছিল না, ৩ সেগমেন্টের ২য়টিতে আবার সাইলেন্ট ফিল্ম ট্রিটমেন্ট, জানা না থাকায় ভাবছিলাম ফাইলে সমস্যা কিনা। বুঝে নিশ্চিত হতেই ২ দিন গেল।
১৯১১ এর প্রেক্ষাপটের গল্পটি ‘Flowers of Shanghai’ থেকে অনুপ্রাণিত। চরিত্ররা স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছে, শোনা যাচ্ছে না, শুধু স্ক্রিনে ফাঁকে ফাঁকে সংলাপগুলা দেখানো হচ্ছে। পেছনে চলতে থাকা আবহ সঙ্গীত যেন নায়ক নায়িকার মনের প্রেমালু অনুভূতিকেই বোঝাচ্ছে, রাজনৈতিক দিক থেকে কঠিন সময়টায় একজন সঙ্গীতশিল্পীর সাথে প্রকাশ্যে প্রেম করা তো সম্ভব না।
তাই তাদের যোগাযোগ বা কথোপকথনের কোথাও তাদের মনের আসল কথা নেই। প্রথম সেগমেন্ট ১৯৬৬ সালে স্নুকার্স খেলাঘরে প্রেম। এক আর্মির স্নুকার্স খেলতে গিয়ে দেখা হয় স্নুকার্স গার্লের সাথে। এই গল্পটা হসিয়ানের নিজের জীবন থেকে নেয়া। ওই সময়টাকে সবদিক থেকে সবচেয়ে মিষ্টি ও সরল সময় হিসেবে মনে করেন তিনি।
তখন কাউকে ভালো লাগলে ডাকযোগে জানানো যেত। লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ২ মিনিট পাশের দোকানে বসে কিছু খাওয়া, ফেরার পথে ইতস্তত হাত ধরে অনুভূতির প্রয়াণ। মিউজিক হিসেবে rain and tears গানটা সিনেমা শেষে এখনও মাথায় বাজছে।
সবচেয়ে নস্টালজিক করে দেয়ার মত এই সেগমেন্ট আমাকে হুক করার আরেকটা কারণ ওয়াং কার ওয়াইর Love trilogy এর ফিল পাওয়া যায়।শেষের সেগমেন্টটা বর্তমান ইন্টারনেট যুগে, যখন ইনফরমেশানের আধিক্যে সম্পর্ক, আবেগ সবকিছুতে একটা অস্থিরতা, বিভ্রান্তি বিরাজমান। ১৯১১ থেকে সরাসরি এখানে ঢোকার ফলে ট্রান্সফরমেশানটা হুট করে হলেও অভিনেতাদের অভিনয় আর পরিচালকের নিখুঁত ডিটেইলিং এর কারণে সমস্যা হয়নি। হসিয়েন বলেন, এই সময়টা ধরতে তার সময় লেগেছে বেশি, প্রায় ৯০ মিনিটের ফুটেজকে ৪০ মিনিটে আনতে হয়েছিল।
একটা পেটমোটা দাড়িগোঁফওয়ালা লোক
পরিচালকের আগের ফিল্ম “Millenium Mumbo” থেকে অনুপ্রাণিত সেগমেন্টটিতে নায়িকা শু-কীর অভিনয় বেশি করে প্রশংসিত হয়েছে। রিলেভেন্ট আধুনিক একটা স্টোরি, সময়ের সাথে সাথে প্রেমের বহিঃপ্রকাশে স্বাধীনতা হিসেবে অন্তরঙ্গ দৃশ্যও রয়েছে। সবমিলিয়ে ২ ঘন্টা লম্বা Three Times এই সময়ের জন্য মানানসই একটা ফিল্ম, অ্যান্থলজির হিড়িকের সময়ে এই ফিল্মের ভিশন থেকে শেখার কিছু আছে।
- এই শহরেরই এক বাসিন্দা রিফাত ইসমাইল
- বিদ্যমান সিস্টেমকে ভাঙা আদৌ
- কিভাবে আপনি অপরিচিত ইমো নাম্বার বের করবেন, জেনে নিন
- অশ্লীল ভঙ্গিতে সুন্দরী রমণী ইমাম গাজ্জালীকে কাবু করতে চাইলোও তা পারলো না
মেঘাচ্ছন্ন বিষণ্ণ কালার প্যালেটটা বৃষ্টির দিনে দেখতে বিশেষ ভালো লাগা কাজ করে। স্লো স্টাইলিশ রোম্যান্টিক কিছু দেখতে চাইলে এই বস্তু মিস দিয়েন না। রটেন টোম্যাটোজে আমার গ্রেডিংঃ A-ট বেলার কত স্বপ্ন থাকে যেগুলো পূরন হয় না, আর হওয়ার নয়।
আমাদের মধ্যে থাকে কত গুলো মানুষ! একটা মানুষ হতে হয় দায়িত্বের চাপে আরেকটা মানুষ,যেটা আমারা হতে চেয়েছিলাম। গল্পটা এমনই ইমোশনকে ঘিরে।একটা পেটমোটা দাড়িগোঁফওয়ালা লোক যার জীবনের অর্ধেক কেটে গেছে, স্ত্রী নেই পুত্র নেই। আছে একরাশ আশা সিনেমা বানানোর।
কিন্তু ওই দায়িত্ব সমাজ! অর্ধবয়সী লোকের মধ্যেকার আশা, আকাক্ষা, ইচ্ছে মিলিয়ে দেখলে মনে হয় আরেকটা মানুষ, যে শিশুর মত কোমল। এই অর্ধবয়সী লোকের বাসায় একদিন কোথা থেকে এসে হাজির হয় আট বছর বয়সী এক বাচ্চা। না! না! ও হ্যালুসিলেশন না। হ্যালুসিলেশনকে অন্যকেউ দেখতে পায় না।
কথাবার্তা আচার আচরণ সব অর্ধবয়সী
অথচ ওকে পায়, ওর কথাবার্তা আচার আচরণ সব অর্ধবয়সী লোকটার মত। অথচ লোকটা তাকে চেনেও না, আস্তে আস্তে এই বাচ্চাটাই জড়িয়ে পড়তে থাকে তার জীবন ঘিরে৷ এমনকি তার বান্ধুবীও ভাবতে থাকে তার লুকানো ছেলে, কিন্তু লুকানো ছেলেও না তাহলে কে এই বাচ্চা ছেলে? ইরানি সিনেমায়, বাংলা ডাবিং, দেখতে নিয়ে প্রথমে মনে হলো ইরানি প্রেক্ষাপটের সাথে বাংলা ডাবটা ঠিক যাচ্ছে না৷
কিছুক্ষন দেখে যখন সিনেমাটার ইমোশন ছোয়া গেল, তখন বোঝা গেল ভাষা, দেশ, মানুষের উর্দ্ধে যা থাকে তা হলো অনুভূতি।চরকিতে দেখেছি, বাংলায় ডাব করা]রুন আপনি টাইম ট্রাভেল করে ফিউচারে গেলেন।
গিয়ে দেখলেন সামনে আপনার ভবিষ্যতের আপনি আপনার অপেক্ষায় আছেন। জীবনের শেষ কয়টা কথা বলে আপনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আপনি মারা গেলেন। আপনার মারা যাওয়া আপনি নিজের চোখে দেখেলেন। কেমন লাগবে? এরকমই একটা দৃশ্য দেখে বেশ ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম।২০১৭সালে কালা ভাইরাস নামক এক ভয়ংকর ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মহামারী শুরু হয়।
তারপর থেকে সে ভাইরাস একের পর এক নিজেদের মধ্যে বিবর্তনের মাধ্যমে মিউটেশন করতে থাকে এবং আগের ভেরিয়েন্ট তুলনায় আরো বেশি ভয়ংকর হতে থাকে। এভাবেই পৃথিবী প্রায় মানব শূন্য হয়ে গেছে। ২০৪৩সাল, টাইমমেশিন আবিষ্কার হয়েছে। টাইম মেশিনে করে জেমস কোল নামক একজন ইয়াং ছেলেকে পাঠানো হয়েছে ভাইরাসের আউটব্রেকের আগে। যাতে করে সে ভাইরাস ছড়ানোর আগেই ভাইরাসের অরিজিন জেনে সেটাকে আটকাতে পারে
জেমস কোল যখন ট্র্যাভেল করে অতীতে
বাঁচাতে পারে ৭মিলিয়ন মানুষকে। জেমস কোল যখন ট্র্যাভেল করে অতীতে যায় তখন কি সে পারবে ভাইরাসের আউটব্রেক আটকাতে নাকি তার সামনে আসতে থাকবে নতুন নতুন রহস্যএই পর্যন্ত স্টোরি অবশ্য ১৯৯৫সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একই নামের সাই ফাই ক্লাসিকেই দেখেছেন আপনারা। যা দেখেননি তা দেখবেন প্রথম ৩টা এপিসোড এর পর থেকে বাকি ৪৪টা এপিসোডে।করোনা আসার আগেই এই সিরিজ শেষ হলেও এখনকার সিচুয়েশনের সাথে এই সিরিজের বেশ কিছু মিল পাওয়া যায়। এই যেমন করোনা একের পর এক ভেরিয়েন্ট বের করেই যাচ্ছে। ভ্যাকসিনগুলোও দরকারের তুলনায় কম কাজ করছে।
এই সিরিজে প্রাইমারি বলে কিছু মানুষদের দেখানো হয়েছে যারা স্পেস & টাইমের সাথে কোনো এক সম্পর্কের কারণে বিভিন্ন টাইমের মানুষদের কথা ফিশফিশ শুনতে পায়। কয়েকদিন আগে BBC এর একটা নিউজে দেখলাম এ পর্যন্ত অন্তত ২০জন এমন রোগী পাওয়া গেছে যারা বিভিন্ন রকমের ফিশফিশ শুনতে পায়। এবং এদের বেশ কিছু বিভিন্ন দেশের পলিটিশিয়ানও আছে।
সিন্ড্রোমটার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। যদিও বলছিনা যে সিরিজের মতোই এরাও টাইম রিলেটেড কোনো সমস্যায় ভুগছে।এবার আসি সিরিজ আমার কেমন লেগেছে। অবশ্যই ক্রিমিনালি আন্ডাররেটেড লেগেছে। মানে এত দুর্দান্ত এঞ্জয়েবল সিরিজ নিয়ে কোনো হাইপ নেই, তেমন পপুলার ও নয়।
নামীদামী কোনো নেটওয়ার্ক
এর একটা কারণ হতে পারে এটা SyFy চ্যানেলের শো। SyFy না হয়ে নামীদামী কোনো নেটওয়ার্ক হলে হয়তো অনেক হিট হয়ে যেতো।সিরিজের মেকিং কিছুটা সিনেম্যাটিক। বেশ ভালো রকমের অ্যাকশন আছে। ফাস্ট পেজড স্টোরি টেলিং, ফাস্ট ডায়লগ, ফাস্ট স্ক্রিনপ্লে এঞ্জয়মেন্টটা বাড়িয়ে দিয়েছে। সিরিজের বেশ কিছু জিনিসে আমি ডার্ক এর ফিল পেয়েছি। যদিও এটা ডার্কের আগেই বানানো।
তবে ডার্কের মতো পারফেক্ট আমি বলবো না। হালকাপাতলা প্লটহোল রয়েছে। কিন্তু যেহেতু দারুণ এঞ্জয় করবেন সেহেতু ঐ হালকাপাতলাগুলো গায়ে লাগবে না। সাসপেন্স বেশ ভালো। কিছু এপিসোড দেখার পর একটার পর একটা এপিসোড দেখতে বাধ্য করেছে। পুরোটা সময় আমাকে ধরে রেখেছে। ৫দিনে ৪৭টা এপিসোড দেখেছি। সারাদিনই প্রায় দেখেছি। রাতে ঘুমানোর পরও এর সাই ফাই স্টাফগুলো স্বপ্নে জ্বালাতন করেছে।
এখানেও রয়েছে ডার্কের মতো সম্পর্কের বেড়াজাল যা এপিসোড যত বাড়বে তত বাড়তে থাকবে। এবং শেষ পর্যন্ত একটা স্যাটিসফাইড ফিনিশিংও দিয়েছে যা প্রশান্তিদায়ক। একের পর এক গল্পের মোড় পরিবর্তন মজাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এইসব জিনিসের ফিনিশিং নিয়ে টেনশনই হয়।
না জানি এত ভালো স্টোরি শেষ গিয়ে নষ্ট করে দেয়! কিন্তু তা হয়নি। শেষ করে শান্তির ঘুমই দিতে পেরেছি।এই সিরিজ দেখার আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিলো। আমার মতে এটা একটা মাস্ট ওয়াচ এন্টারটেইনিং শো। আমার পক্ষ থেকে হাইলি রেকমেন্ডেড।