গল্প মোটামুটি। স্টোরি ডেভলপমেন্টে জোর কম ছিলো। কিছু জায়গায় কিছু ঘটনা দেখে মনে হলো, না হলেই পারতো। যাকে আমরা বলি গল্পের ফ্যাট। স্টোরি আর্ক দূর্বল মনে হয়েছে। স্পেশালি শেষে যখন মিস্ট্রি রিভিল হয়। কিছু একটা রিভিল হলো, অথচ ফিল করতে পারলাম না। একজন গল্পকার হিসেবে এই বিষয়গুলো আমার চোখে বেশি পড়েছে। ক্লিফ হ্যাংগারটা আমি একটু ভিন্ন ভাবে ভেবেছিলাম।
এই লোকটার সাথে কখনো কাজ করার
অভিনয়ে মোশাররফ করিম একশতে নব্বই। উনি ছাড়া হয়তো বাংলাদেশে এই চরিত্র কেউ করতে পারতো না। ব্যাক্তিগত মতামত। শ্যামল মাওলা একশ তে একশ। এই লোকটার সাথে কখনো কাজ করার ইচ্ছা আছে। তাছাড়া মলয় চরিত্রটাও ঠিকঠাক আছে। মমতে এসে ঝামেলা পাকায়ে গেলো। রূঢ় হতে গিয়ে কেমন যেন মেকি হয়ে গেলো ব্যাপারটা। এদিকে ছিনতাইকারীর চরিত্রটা বেশ একটা মেথড এক্টিংয়ের মধ্যে দিয়েই গেছে। ভালো লেগেছে। প্রমিজিং। ভদ্রলোককে চর্কির একটা নতুন শো তেও দেখলাম।
এছাড়া বাকি পার্শ্ব চরিত্রগুলোতে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় নি। প্রথমে যেই মেয়েটা ফ্লার্ট করছিলো, তার অভিনয় এতোটাই বাজে ছিল যে আমি ভেবেছি ফিমেল এসকর্ট। আসলে কলিগ ছিল সম্ভবত সিনেমাটগ্রাফীতে তেমন আহামরী না। গথবাধা বাংলা নাটকের মত। দুই-চারটা শট ভালো লেগেছে। এই ব্যাপারে আমার তেমন ধারনা কম। দর্শক হিসেবে মনে হলো তেমন কারিশমা নেই। অবশ্য এটা অনেকের কাছে তেমন ইম্পর্টেন্ট না।সিনেমাটিক কালারগ্রেডিং হয়নি। (বাকিটা জানতে কমেন্টে চোখ রাখুন।
সর্বোপরি সিরিজটা যদি একটা পেইন্টিং হয় তবে সেটাতে রংগুলো যেন ঠিক মত মিশলো না। কিছুটা খাপছাড়া খাপছাড়া। সিরিজটা যদি গান হয়, হঠাৎ হঠাৎ ছন্দ পতনের জন্য ঠিক হারিয়ে যেতে পারছিলাম না। সিরিজ শেষের এমনটাই অনুভূতি। না তবে দেশী কাজের খাতিরে, হ্যা। এবার বলবো দেশী কাজের খাতিরে ব্যাপারটা নিয়ে।
আপনারা খেয়াল করে দেখবেন আশির দশকে ঘুড্ডি বের হয়। তারপর? ঘুড্ডির মত আর কয়টা সিনেমা আছে? আমার জানা নাই। গেলো আশি। দশ বছর আগে “ও বন্ধু লাল গুলাবি” শুনে মনে হলো এইযে এই নাটকটা “অল টাইম দৌড়ের উপর” , এটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাই বদলে দিবে।
এক লাফে একটা পর্যায়ে গিয়ে
দিলো কি? আমরা পেয়েছি ব্যাচেলার পয়েন্টের মত বস্তাপচা “সিটকম” চেহারা ধারী অখাদ্য। বাংলাদেশের নাটক সিনেমার কার্ভটা যদি লক্ষ্য করেন, দেখবেন, প্রথমে এক লাফে একটা পর্যায়ে গিয়ে সেখান থেকে ধীরে ধীরে অবনতিই হতে থাকে। অথচ উন্নতি হওয়ার কথা। এইযুগটা ওটিটি প্ল্যাটফর্মের। এখানে অনেকেই ইনভেস্ট করছেন। করোনায় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির নাজেহাল অবস্থা। ওটিটিই এখন সবার শেষ ভরসা। এদিকে নেটফ্লিক্স, আমাজন দিন গুনছে কখন দেশে মানুষরা পয়সা দিয়ে সিরিজ দেখবে।
ওটিটি নিয়ে সবার অনেক আগ্রহ। টিকে গেলে ভালো। তবে আমার মনে হয় একই ঘটনা আবারো ঘটবে। ধীরে ধীরে বস্তাপচা গল্পের কাজ জমতে জমতে বর্তমান “বাংলাদেশী নাটক” এর মত নাজেহাল অবস্থা হবে। হতেই পারে। আবার নাও হতে পারে। আমি চাই, না হোক। এর জন্য দরকার সমালোচনা।
কন্স্ট্রাক্টিভ ক্রিটিসিজম বাঙলির রক্তেই নাই সম্ভবত। তবে এটা দরকার। ভালোর জন্য দরকার। আজ যদি মহানগর কে বাকিরা স্কেল ধরে নেয়। তাহলে এর থেকে নিচেই নামতে থাকবে। যারা বলছেন, “বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ডে অনেক ভালো কাজ” তাদের বলবো, বাংলাদেশের আগের কয়টা কাজ দেখসেন? খোজ লাগান।
নাটকেই খোজ লাগান। বলছি না মহানগর কে 4-5 রেটিং দিবো। আমার ব্যাক্তিগত রেটিং 6.5 । তবে অবশ্যই 8 না। আশফাক নিপুণকে আমার ব্যাক্তিগত ভাবে দুইটা কারনে পছন্দ। এক, সোশ্যাল মিডিয়াতে অন্যায় আর অনৈতিকতার বিরুদ্ধ নিয়মিত কথা বলার এটিচিউটটা, দুই,
আজ থেকে দুই বছর আগে গ্রামীন ফোনের আয়োজিত রিলহান্টের জাজ থাকা কালীন তিনি একটা কথা বলেন, সেটা হলো “কাজে অনেস্টি থাকা খুব জরুরী।” কথাটা আমি আজ পর্যন্ত মনে রেখেছি। সামনেও রাখবো। এমনিতে তিনি প্রচলিত জনরার বাহিরের গল্প নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। চেষ্টা করেন। তাঁর অনেস্টি কে স্যালুট।
দুর্নীতিকে চোখে আঙুলে দেখিয়ে দিয়েছেন
বাংলাদেশের মত একটা দেশে যেভাবে দুর্নীতিকে চোখে আঙুলে দেখিয়ে দিয়েছেন সেই সাহসকে বাহবা জানাই। হয়তো অনেক রকম বাধা বিপত্তি ছিল। হয়তো কিছু বিষয় সেই কারনে কমপ্রোমাইজ করতে হয়েছে। সে যাইহোক, ডিরেক্টর আশফাক নিপুণের কাছ থেকে আরো ভালো ভালো কাজ আশা করি। সর্বোপরি সিরিজটা মাস্টারপিস না। তবে খারাপও না। দেখে আসতে পারেন। তবে এটাকে হুদাই মাস্টারপিস বানাবেন না। কথা ওইটাই, আমরা আশফাক নিপুণের কাছ থেকে আরো অনেক ভালো কিছু আশা রাখি।
- এমন উপভোগ্য হরর মুভিই খুঁজছিলাম
- থ্রিলার দেখে প্রথমেই ডেভিড লিঞ্চের পরাবাস্তবতা
- দেখুন কিভাবে লাইক কমেন্ট বৃদ্ধি করবে ফেসবুক
মহাকাশ নিয়ে নির্মিত কিছু মুভি নিয়ে এলাম। দুই একটা মুভি স্পেইস রিলেটেড না তারপরেও স্পেইস রিলেটেড কিছু বিষয় থাকায় লিস্টে এ্যাড করলাম। মুভির প্রেক্ষাপট ভবিষ্যৎ ২০৩৫ সালের যখন লুনার ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফিউশান এনার্জি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটি মূলত চাঁদের পৃষ্ঠতল হতে হিলিয়াম সংগ্রহ করে যা দিয়ে পৃথিবীর ৭০% শক্তির চাহিদা মেটে। কিন্তু এই হিলিয়াম সংগ্রহের বেলায় তারা চাঁদে সত্যিকার নভোচারীর বদলে অবৈধভাবে তাদের অসংখ্য ক্লোন তৈরি করে পাঠায় আসল নভোচারী পাঠানোর খরচ বাচানোর জন্য।
এমতাবস্থায় দুটি ক্লোন পরস্পরের দেখা পেলে কি কি ঘটনা ঘটতে পারে সেটা নিয়েই মুভির কাহিনী। মুভিটা নিয়ে আরও বেশি এক্সপেক্টেশান ছিল। হয়ত অনেক টুইস্টেড কিছু আশা করছিলাম, পরে খেয়াল করলাম ডিরেক্টর ইচ্ছা করেই মুভির প্লট বেশি কমপ্লিকেটেড না করে শুধুমাত্র তীক্ষ্ণ এডিটিং এর মাধ্যমে দর্শককে কনফিউজড করতে চেয়েছেন।
এইদিক দিয়ে তিনি সফল। টাইম ট্রাভেলের উপর বেইজড করে মুভিটি নির্মিত। টাইম ট্রাভেলের দুইটি প্যারাডক্স রয়েছে- প্রথমটি হলো Bootstrap Paradox. “এখানে কোন ব্যক্তি বা বস্তু এমনভাবে একটি প্যারাডক্সের ভিতরে আটকে যায় যাতে তার কোন পয়েন্ট অফ অরিজিন থাকে না।
সেটা নিয়েই মুভির কাহিনী
” আরেকটি হলো Predestination Paradox, এটার মানে – “, তা !” এই দুটি paradox বুঝতে পারলে মুভির ঘটনাচক্র বোঝা সহজ! টাইম ট্রাভেল সম্ভব কি না সেই আলোচনা না হয় তোলা থাকলো অন্যদিনের জন্যে। যদি ধরে নেই, মানুষ একসময় টাইম মেশিন, কৃষ্ণগহ্বরে মহাকর্ষ, বা ওয়ার্ম হোল ব্যবহার করে বা আলোর গতিতে ভ্রমণ করে টাইম ট্রাভেল করতে শিখে যায়। তখন হবে কি? টাইম ট্রাভেল করা সম্ভব হলেও কি অতীতে যাওয়া সম্ভব? কেননা যতহোক, গ্রান্ডফাদার প্যারাডক্সের বাধাটা তো রয়েই