বিন লাদেনের মৃত্যুর শেষ কয়েক ঘন্টাই যা ঘটেছিল

আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর শেষ কয়েকটি ঘন্টায় কি কি ঘটেছিল।  তা আজও পৃথিবীর কাছে রহস্য। কিভাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পুলিশ প্রশাসন সবকিছুকে ফাঁকি দিয়ে মাত্র মাটি থেকে দুই ফুট উচ্চতায় বিশেষ প্রযুক্তির দুটি হেলিকপ্টারের ওসামা বিন লাদেনকে ঘায়েল করেছিল।

বিন লাদেনের মৃত্যুর শেষ কয়েক ঘন্টাই যা ঘটেছিল

এই ঘটনা প্রত্যক্ষ সাক্ষী পারভীনের ম্যানহান্ট এর, ঘটনা গুলো বিস্তারিত জানতে এই পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত দেখুন। বিন লাদেনের পরিবার তখন রাতের ঘুমের প্রস্তুতি নিয়েছিল । পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সময়ের মধ্যে ৮ ঘণ্টা ব্যবধান হওয়ায় ওসামা বিন লাদেন যে জালালাবাদ শহরে বসবাস করতেন ।

সেখানে তখন বাজছিল  ১০ঃ৩০  যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৩ জন সদস্য টু ব্ল্যাক হক প্রযুক্তির হেলিকপ্টারে চড়ে ঘায়েল করার জন্য তখন রওনা দিয়েছে । ওসামা বিন লাদেনের উপরে লেখা বহুল পঠিত বই এর লেখকের পিটারবার্গ বলেন।

বিন লাদেনের মৃত্যুর শেষ কয়েক ঘন্টাই যা ঘটেছিল

হেলিকপ্টারের  খুব কম মাত্রায় শব্দ  নির্গত হচ্ছিল । কারণ সেগুলো বিশেষ প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি । সে হেলিকপ্টারের পাখায় যে ব্লেড ব্যবহার করা হয়েছে । সেগুলো অত্যাধুনিক বিশেষ প্রযুক্তির যার।  ফলে শব্দ হচ্ছিল খুব কম। আর মাটি থেকে কয়েক ফুট উচ্চতায় হেলিকপ্টারগুলো পাকিস্তানের রাডার ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে চলছিল।

সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল আমেরিকা

ওসামা বিন লাদেন কে খুঁজে বের করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল আমেরিকা। পাকিস্তানের সীমানা পেরোনোর পরই পেশোয়ার থেকে উত্তর দিকে ঘুরে যায় হেলিকপ্টার । দুর্ঘটনায় পৌঁছাতে সময় লেগেছিল প্রায় দেড় ঘন্টা।

উপর থেকে ড্রোনের মাধ্যমে পুরো ঘটনা চোখে দেখেছিলেন বারাক ওবামা । তিনি বলেন এই ৪৫ মিনিট ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়। বারাক ওবামা নিজে ব্যক্তিগতভাবে আরও দুটি হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ছিলেন । যাতে কোনোভাবেই অপারেশন টি মিস না হয়।

এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ বেধে গেলে যাতে যুদ্ধ করতে করতে চারটি হেলিকপ্টার অন্তত আফগানিস্তানের সীমানায় ঢুকে পড়তে পারে। কেননা আফগানিস্তান ছিল তখন আমেরিকা ওধিনে। কিন্তু শুরুতেই ব্যর্থ হয় আমেরিকান সেনা বাহিনী ।

সর্বপ্রথম যে হেলিকপ্টারটি ওসামা বিন লাদেনের বাড়ির সামনে ল্যান্ড করতে গিয়েছিলো, সেটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওসামা বিন লাদেনের বাড়ির দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্লাড গ্রুপ ভেঙে যায় । তবে পাইলট কায়দা করে কোনভাবে সবাইকে অক্ষত অবস্থায় সেখান থেকে নামিয়ে আনেন। কোন প্রাণহানি হয়নি ।

সিল টিমের সদস্যরা শুরুতেই ওসামা বিন লাদেনের বাড়ি দোতলায় ওঠার সময় লাদেনের ৩০ বছর বয়সী ছেলে নিষ্পাপ খালিদকে নিঃসংশ ভাবে হত্যা করে। তার টেবিলের  উপর কয়েকটা এ কে ফরটিসেভেন ওভার পিস্তল রাখা ছিল ।

নিষ্পাপ খালিদকে নিঃসংশ ভাবে হত্যা করে

কিন্তু বিন লাদেন সেদিকে না গিয়ে আগে লোহার দরজা খুলে দেখতে চেষ্টা করেছিলেন যে বাইরে কিসের শোরগোল হচ্ছে। একজন সদস্য দেখে ফেলেন। দেখা মাত্র বিন লাদেন  দিকে ধাওয়া করে, মুহূর্তের মধ্যে লাদেন ঘরের গিয়েছিলেন ।

কিন্তু তখনই বড় ভুল করেন। তিনি লোহার দরজাটা বন্ধ করেননি । যেটা কিছুক্ষণ আগে লাদেন খুলেছিলেন । কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সদস্য ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েন

লাদেনের স্ত্রী আরবি ভাষায় চিৎকার করে কিছু একটা বলে। স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে পরে ছিল। সদস্য এক মুহূর্ত দেরি না করে লাদেনের স্ত্রীর উপর গুলি চালায়। কোন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেননি । কারণ তিনি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন । আর্সিল সদস্য যখন বুঝতে পারলেন যে একে একে দুটি গুলি লাদেনের স্ত্রীর বুকে লেগেছে ।

Capture1

তখন সেই একই স্থানে তিনি ডাবল ট্যাপ সঞ্চালন এর ফলে তার স্ত্রীর বুক ভেদ করে বিন লাদেনের বুক ঝাঁঝরা হয়ে যায় । একজন স্পেশাল অপারেশন্স অফিসার বলেছিলেন যে বিন লাদেনকে জীবন্ত ধরা অথবা নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না তাদের লাদেন কে মেরে ফেলার সিদ্ধান্তটা ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে নেওয়া হয়নি .

মোবাইল ফোন আর হার্ডডিস্ক গুলো একত্রে করছিল যাতে সেগুলো পরীক্ষা করিয়ে আল-কায়দার কার্যপ্রণালী এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানা যায় বিন লাদেনের মৃতদেহ রাখা হয়েছিল। তখন উপর থেকে যে ড্রোনের চোখ ওসামা বিন লাদেনের উপরে নজরদারি করছিল আর যেটা মূলত সরাসরি ওবামা নিজেই নিয়ন্ত্রণ করছিলে সেটা খুব কাছাকাছি এসে নিশ্চিত হয় আদতে ওসামা বিন লাদেন পড়েছে ।

বারাক ওবামা তার স্পেশাল টিমের মাধ্যমে ১০০ ভাগ নিশ্চিত হন

কিনা যখন বারাক ওবামা তার স্পেশাল টিমের মাধ্যমে ১০০ ভাগ নিশ্চিত হন যে এটা ওসামা বিন লাদেনের লাশ তখন তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়ে সরাসরি হোয়াইট হাউসে নিয়ে যান হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তব্য প্রচার হতে শুরু হলো।

প্রথমেই অনেকেই মনে করেছিল ও বাবা নিশ্চয়ই লিবিয়া বিষয়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে যাচ্ছেন ।কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে ওবামা এমন একটি তথ্য দিল যা শুনার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিল না । তিনি জানান দীর্ঘ এক দশকের অভিযান শেষে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *