ভারত রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কিনছে

সম্প্রতি রাশিয়া অর্থনৈতিক চাপে পড়ে তেলের দাম কমিয়েছে। আর এই সুযোগই নিচ্ছে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের অন্যতম বড় ক্রেতা ভারত। এর আগে গত সপ্তাহের শুরুতে আরও ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনেছিল ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি)। তখন ব্যারেলপ্রতি ছাড় ছিল ২০ থেকে ২৫ ডলার।

এ দিকে  ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (এমআরপিএল) নামে ভারতের অপর একটি জ্বালানি কোম্পানিও তেল কেনার জন্য দরপত্র তৈরি করছে। এমআরপিএল রাশিয়া থেকে ১০ লাখ ব্যারেল তেল কিনতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস কেনার ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্য দেশগুলোকেও প্রতিশোধমূলক নিষেধাজ্ঞার বার্তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এমন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে কিছু দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে না। ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম দামে তেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে রাশিয়া। ভারত   লাভের আশায় মার্কিন হুমকি উপেক্ষা করেই দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, রাশিয়ার তেল কেনা এড়াতে আমেরিকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। গত শুক্রবার জানায়, জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের নির্ভরতা ‘রাজনীতিকরণ’ করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রও অগত্যা এই যুক্তি মেনে নিয়েছে।

ভারতের একজন সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তাঁরা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ও মার্কিন ডলারের ব্যবহার এড়িয়ে তেল কেনাবেচায় নিজস্ব রুপি ও রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে রাশিয়ার তেল ও অন্যান্য পণ্য কম দামে কিনতে পারবে ভারত।

সম্প্রতি ভারতের তেলমন্ত্রী  আশ্বাস দেন, দুই বছরের মহামারি এবং তার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সব রকম বিকল্প খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, সেই সূত্রে রাশিয়ার সস্তায় তেল বিক্রির প্রস্তাব খতিয়ে দেখার কথা। এ নিয়ে সে দেশের সরকারি কর্তাদের সঙ্গেও তাঁর আলোচনা হয়।

ভারত বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি ব্যবহারকারী দেশ। তাদের আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশই অপরিশোধিত তেল। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আসে মাত্র ৩ শতাংশ। জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক জানিয়েছে, চলতি বছরে ভারতে তেলের চাহিদা ৮ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। সে জন্য রাশিয়া থেকে কম দামে তেল কিনছে দেশটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *