পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী ২১ মার্চ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। শেখ মুজিবরের যোগ্য কন্যাসন্তান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে চলছে সার্বিক প্রস্তুতি।
পটুয়াখালীতে ইতিমধ্যে তাঁকে বরণ করতে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে ২০০টি নৌকা। এসব নৌকা রংবেরঙে সাজানোর কাজ প্রায় শেষ। এ অঞ্চলের জেলেরা রঙিন পাল তুলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশের রামনাবাদ নদীতে ভেসে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কলাপাড়ায় আগমনকে কেন্দ্র করে দিন-রাত চলছে প্রস্তুতি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বলেছেন, কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরের আন্ধারমানিক নদীর মোহনায় এসব নৌকা সাজানোর কাজ চলছে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে।চারুকলার একটি দল এসব নৌকায় রংবেরঙের নকশা করছে। তাদের সহযোগিতা করছেন স্থানীয় জেলেরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলাপাড়ায় আসছেন, এটা এ অঞ্চলের মানুষের জন্য অনেক বড় আশার খবর,এমনটাই জানিয়েছেন কুয়াকাটা মৎস্যজীবী সংগঠন আশার আলো সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ।প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ২০০ নৌকা দিয়ে তাঁকে বরণ করতে তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে মিশে আছে নদী-সাগর-নৌকা। এটা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের জীবন-জীবিকার সেই বাহন দিয়েই আমরা স্বাগত জানাতে চাই। এ জন্য ২০০ নৌকা বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হচ্ছে।
পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলা বলেন, ২০২০ সালের ১৫ মে থেকে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদন শুরু করে এবং ওই বছরের ডিসেম্বরে দুটি ইউনিটে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা লাভ করে।
তবে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়ায় এখন একটি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ জাতীয় গ্রিডে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পুরোটাই সরবরাহ করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী ২১ মার্চ এই প্রকল্প উদ্বোধনের সম্মতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) মালিকানায় বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নামে তৈরি হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম অংশে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
পাশাপাশি প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশে আরও ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে বলে জানান প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। এতে জাতীয় গ্রিডে পায়রা থেকে মোট ২ হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) জানায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী এলাকায় ৯৮২ দশমিক ৭৭ একর জমির ওপর বিসিপিসিএল নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এর মধ্যে চীন বিনিয়োগ করেছে এক্সিম ব্যাংক থেকে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিকল্পনা কোভিড প্রটোকলকে গুরুত্ব দিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে। সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ চলছে। এরই মধ্যে সাদাপোশাকের নিরাপত্তা বাহিনীসহ চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী মাঠে কাজ করছে।