২০১৬-তে মালায়ালাম ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রিতে কিছু নতুন পরিচালক এর আবির্ভাব ঘটেছে একাধিক সিনেমায় যেমন- শানাভাস কে. বাভাকুট্টি (কিসমাত), জনপল জর্জ (গুপ্পি), সুজিত বাসুদেব (জেমস এন্ড এলিস) ও গণেশ রাজ (আনন্দাম)– তারা প্রত্যেকেই তাদের প্রথম সিনেমা নিয়ে দর্শক এর সামনে হাজির হয়েছেন। মালায়ালাম ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রিতে বরাবরই গল্পপ্রধান সিনেমা প্রাধান্য পেয়েছে, সেইসব গল্পকে ঘিরে তৈরি হয়েছে হাজার হাজার নতুন নতুন দর্শক। যার কারণে চিত্রনাট্য লেখকদের গুরুত্ব বেড়েছে, তারা ভিন্ন স্বাদের গল্প লেখতে হয়েছে উৎসাহী।
সিনেমার চাহিদা তৈরি হবে,
আর যখন এইরকম গল্পপ্রধান সিনেমার চাহিদা তৈরি হবে, সেক্ষেত্রে পরিচালক নতুন হোক বা অভিজ্ঞ, সেই গল্পকেই পর্দায় দেখাতে চাইবে।পরিচালকঃ শানাভাস কে. বাভাকুট্টি।জঁনরাঃ রোমান্স, ড্রামাঅভিনয়েঃ শানে নিগাম, শ্রুতি মেনন, বিনয় ফর্ট।সত্য ঘটনায় নির্মিত ছবিটি একটি প্রেমিক যুগলের যাত্রা দেখানোর মধ্যে দিয়ে সমাজের সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের যে চিত্র উঠে আসে তা আপনার চিন্তাকে বিচলিত করবে। একই কারণে ছবিটি আরও একটি রীতিবিরুদ্ধ ভালবাসার গল্প থেকেও বেশি কিছু।
হ্যানিবল লেক্টারের সাথে অনেকেরই পরিচিতি
নাটকীয়তা আর অতি-আবেগ বর্জিত গল্পটি রিয়েল টাইমে বিন্যস্তপরিচালকঃজনপল জর্জ।জঁনরাঃ ড্রামা।অভিনয়েঃ চেতন জয়লাল, তবিনো থমাস, রোহিনি, এলেন্সি য়েরলেয়লোপেজ,শ্রীনিবাসন।ঘরে অসুস্থ মা, পাড়ায় উচ্ছনে যাওয়া কয়েক বন্ধু আর ক্ষুদ্রকায়-রামধনুক মাছ গুপ্পি– এই নিয়ে গুপ্পির পৃথিবী। প্রিয় মাছের নামানুসারে তার নামও হয়ে যায় ‘গুপ্পি’। সে স্বপ্ন দেখে মা’র জন্য একদিন অটোম্যাটিক হুইল চেয়ার কিনবে। সেই চেয়ারে বসে মা তার আস্ত পাড়া ঘুরে বেড়াবে।
একদিন তার সেই ছোট্ট পৃথিবীতে এক বিদেশী আসে, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, গ্রামে সে রেলওয়ে ব্রীজ বানাতে এসেছে। কিন্তু প্রথমদিন থেকেই গুপ্পির সাথে তার তুমুল দ্বন্দ্বপরিচালকঃ সুজিতবাসুদেবজঁনরাঃফ্যামিলিড্রামাঅভিনয়েঃ পৃথ্বীরাজসুকুমারান ভেধিকা।জেমস ও এলিসের পরস্পরের প্রতি প্রচন্ড ভালোবাসা বিয়ে পর্যন্ত গিয়ে ঠেকলেও, সংসার টানতে যথেষ্ট হয়নি। সম্পর্কের টানাপড়েন তখন স্পষ্ট হয় যখন দায়িত্বের গ্যাঁড়াকলে পড়ে প্রিয়জনকে সময় না দেয়াটাও একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়।
পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে সংসার জীবনের
পরিচালক সম্পর্ককে যথাসম্ভব তিক্ত পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে সংসার জীবনের অগভীর দিকগুলোকে সূক্ষ্মদৃষ্টিতে দেখবার চেষ্টা করেছেন। আনন্দাম (Aanandam) পরিচালকঃ গণেশ রাজ। জঁনরাঃ রোমান্টিক কমেডি। অভিনয়েঃ অরুণ কুরিয়ান, থমাস ম্যাথিউ, রশান ম্যাথিউ, বিশাক নায়ার, সিদ্ধি মহাজনকট্টি, অন্নু অ্যান্থনি, আনারকলি মারিকার, নিভিন পউলি। প্রসঙ্গক্রমে ২০০৭ সালের তেলুগু সিনেমা ‘হ্যাপি ডেইজ’ ও ‘আনন্দাম’ সিনেমার গল্প একই। হ্যাপি ডেইজ ছিল একদল ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের পুরো কলেজ জীবনের যাত্রা নিয়ে।
সেখানে আনন্দাম সীমাবদ্ধ কলেজে কাটানো কয়েকটা দিনের মধ্যে। কলেজ থেকে ট্যুরে কাটানো সেই কয়েকটা দিনে তাদের মধ্যে প্রেম, বন্ধুত্ব, আবেগ, সম্পর্ক নিয়েই সিনেমার কাহিনী। কালি (KaLi) পরিচালকঃ সামির তাহির। জঁনরাঃ রোমান্স, থ্রিলার। অভিনয়েঃ দুলকার সালমান, সাই পল্লবী, চেম্বান বিনোদ জোসে, সৌবিন সাহির, ভিনায়াকান। কালি শব্দের মানে ক্রোধ। পরিচালক ক্রোধের চূড়ান্ত পরিণতি দেখাতে একটি নব্য বিবাহিত দম্পতির সম্পর্ককে বেছে নেন।
সিনেমা শুরু হয় দম্পতির ভালোবাসার গল্প দিয়ে, শীঘ্রই পরিচালক কৌশলে একে রোড-ড্রামাতে নিয়ে যান, ফলে গল্পের স্বরে আসে পরিবর্তন, যার শেষটাও টানা হয় একই মেজাজে। উল্লেখ্য, পরিচালকের আগের ছবিটিও ‘‘নীলাকাশাম পাচাকাদাল চুভান্না ভূমি’ (২০১৩) একটি রোড-ড্রামা। মহেশিন্তে প্রাথিকারাম (Maheshinte Prathikaaram) পরিচালকঃ দিলীশ পথান। জঁনরাঃ ড্রামা, অ্যাকশন। অভিনয়েঃ ফাহাদ ফাসিল, অপর্ণা বালামুরালি, অনুশ্রী, এলেন্সিয়ের লেয় লোপেজ, সৌবিন সাহির।
চোখই একটা ফটোগ্রাফকে অনন্য করে
সাধারণের মাঝে অসাধারণকে খুঁজে নেয়ার ভিন্ন চোখই একটা ফটোগ্রাফকে অনন্য করে দেয়, এমন সহজ একটা বার্তা সিনেমায় তুলে আনা হয়। সত্য ঘটনায় নির্মিত সিনেমাটি মূলত সিনেমার নায়ক মহেশের প্রতিশোধ নিয়ে। একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় চরমভাবে অপদস্থ হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিশোধ না নেয়া পর্যন্ত পায়ে জুতো পরবে না। গ্রামীণ লোকেশনে ধারণ করা সিনেমাটি যেন মাটি, প্রকৃতি, সবুজের গন্ধে মোড়ানো। অ্যাকশন হিরো বিজু (Action Hero Biju) পরিচালকঃ অব্রিদ শিনে। জঁনরাঃ অ্যাকশন, ড্রামা। অভিনয়েঃ নিভিন পউলি, অনু ইমানুয়েল।
সিনেমাটি পুলিশি-কেসের অনুসন্ধানে খুব চতুরতার সাথে সমাজ বাস্তবতার বিভিন্ন অসঙ্গতিকে তুলে ধরে। সিনেমায় প্রধান চরিত্র বিশ্বাস করে অপরাধীর বিচার হবে শাস্তির মাধ্যমে, মানবতা দেখিয়ে নয়। মানবাধিকার আইন আর রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় অপরাধীরা যতই পালিয়ে বেড়াক, বিজু তাদের খুঁজে বের করবেই। একজন পুলিশ অফিসার যদি তার কাজের প্রতি সৎ হন তবে অপরাধীর শাস্তি প্রদানে সেটা কতটা যথেষ্ট হয়ে উঠে সিনেমায় তা দেখানো হয়।
জ্যাকুবিন্তে স্বর্গরাজ্যম (Jacobinte Swargarajyam) পরিচালকঃ ভিনীথ শ্রীনিবাসন। জঁনরাঃ ফ্যামিলিড্রামাবায়ো গ্রাফি অভিনয়েঃ রেঞ্জি প্যানিকার, নিভিন পউলি, লক্ষ্মী রামাকৃষ্ণান, ভিনীথ শ্রীনিবাসন। ‘জ্যাকুবিন্তে স্বর্গরাজ্যম’ একটা পরিবারের গল্প। প্রবাসী ব্যবসায়ী জ্যাকব জাকারিয়া ও তার পরিবারের গল্প। সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি কঠিন পরিস্থিতিতে পরিবারের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কগুলোকে নেড়েচেড়ে দেখেছে। ওই সময়ে সম্পর্কের এক হাত অন্য হাতের কতটা আশ্রয় হয়, কিভাবে উত্তরণের পথ খুঁজে নেয়– এইসব নিয়েই সিনেমার গল্প।
পরিচালকঃ রাজিব রবি
কাম্মাতিপাদাম (Kammatti Paadam) পরিচালকঃ রাজিব রবি।জঁনরাঃ ক্রাইম-ড্রামা। অভিনয়েঃ দুলকার সালমান, ভিনায়াকান, মানিকান্দান আর আচারি। তিন দশক ধরে বিস্তৃত গল্পটি বেড়ে উঠে কাম্মাতিপাদাম বস্তিকে ঘিরে, যেখানে দলিত সম্প্রদায়ের বসবাস। যাদের কাছে কাম্মাতিপাদাম তাদের ঘর, আশ্রয় থেকেও বেশী কিছু। রিয়েল এস্টেট মাফিয়াদের কাছে নিপীড়িত হয়ে তারা আজ আশ্রয়হীন। অথচ তাদের রক্তে পদদলিত হয়ে গড়ে উঠেছে ব্যস্ত নগরী কোচি।
বাংলাদেশে এই চরিত্র কেউ করতে পারতো না
প্রচুর অ্যাকশন আর সাহসী সংলাপে ‘কাম্মাতিপাদাম’ নিখাদ গ্যাংস্টার সিনেমা। অরু মুথাসসি গাঁধা (Oru Muthassi Gadha) পরিচালকঃ জুডে অন্থনি জোসেফ। (মালায়ালাম ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রির প্রিয় পরিচালক) জঁনরাঃ কমেডি, ড্রামা। অভিনয়েঃ রাজিনি চান্দি, ভাগ্যলক্ষ্মী, সুরাজ ভেঞ্জারামুদু, লিনা, অপর্ণা বালামুরালি।
সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে দুই বৃদ্ধা। যাদের একজন বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজের বঞ্চিত জীবন নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত। যার খিটখিটে মেজাজে পরিবারের বাকি সবার জীবন অতিষ্ঠ! বৃদ্ধার স্বভাবে পরিবর্তন আসতে শুরু করে যখন তার পরিবার যায় ছুটি কাটাতে।
আর এই নিঃসঙ্গতায় তাকে সঙ্গ দিতে আসে অন্য বৃদ্ধা। কিভাবে একজন অন্যজনের বঞ্চিত জীবনের দুঃখ ঘোচাতে এগিয়ে আসে– এই নিয়েই সিনেমা। পরিচালক তার নিজস্ব স্টাইলে হিউমার ও আবেগ ব্যবহার করে গল্পের বর্ণনা করেছেন, যা উপভোগ্যউইল গ্রাহাম। তার কাজ এফবিআইয়ের হয়ে ক্রিমিনালদের প্রোফাইল করা। তার এক বিশেষ মানসিক অবস্থার কারণে সে যেকোনো মানুষকে অনুভব করতে পারে, তাদের সাথে পুরোপুরি মিশে যেতে পারে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ক্রিমিনালদের মতো করে চিন্তা করতে পারে।
একধরনের মানসিক বিকলতা
কিন্তু তার এই মানসিক অবস্থা বলতে গেলে একধরনের মানসিক বিকলতা। যার কারণে এফবিআই থেকে উইলকে পূর্ণ এজেন্ট হওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়নি।তার প্রধান কাজ ছিল ব্যুরোর ট্রেইনিদের ক্লাস নেয়া। কিন্তু তার এই বিশেষ দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পান ডিটেকটিভ জ্যাক ক্রফোর্ড। ক্রফোর্ড তাকে ক্লাসরুম থেকে নিয়ে যায় ক্রাইম সিনে। ডিটেকটিভ ক্রফোর্ড এবং এফবিআইয়ের ঘুম নষ্ট করছে দ্যা চেসেপিক রিপার নামের এক সিরিয়াল কিলার। কোনোভাবেই এই খুনির হদিস করতে না পেরে ডি