সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন, শেষ মুহূর্তে এসে এক দিন আগে হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার জানায়,হঠাৎ সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হল সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন। কিন্তু এবার সিলেটে বিএনপির সম্মেলন ঘিরে নানামুখী আলোচনা ও উত্তেজনা ছিল।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী পদপ্রার্থী ও সম্মেলনে সভাপতির অনুসারীরা দাবি করছেন, সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করার কথা ছিল। এখানে সভাপতি পদে আরিফুলও প্রার্থী হিসেবে ছিলেন। তাঁর জয়ের সম্ভাবনা ছিল শতভাগ। এজন্যই আরিফুলকে আটকাতেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী পদপ্রার্থীর অনুসারীদের এমন দাবির বিষয়ে কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই। মূলত ওপরের নির্দেশে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বিএনপির আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, আজ রোববার ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকা সময়মতো প্রকাশ করতে না পারায় সম্মেলন ও কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপি’র উর্ধ্বতন নেতারা জানিয়েছেন, কাল সোমবার জেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল। সে অনুযায়ী নগরের সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সম্মেলন আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতিও শেষ করা হয়। সম্মেলন উপলক্ষে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি তফসিলও ঘোষণা করেছিল।
তফসিল অনুযায়ী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিন শীর্ষ পদে লড়তে ১৩ জন মনোনয়ন ফরম জমাও দিয়েছিলেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ফরম জমা দেন।
বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতে, সিলেট বিএনপিতে বর্তমানে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের একচেটিয়া কর্তৃত্ব রয়েছে। মুক্তাদিরের আধিপত্য বা নিয়ন্ত্রণ ভাঙা এবং দলের নেতৃত্বে আবার ফেরার লক্ষ্যে আরিফুল সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে, মুক্তাদির-বলয়ের প্রার্থী হচ্ছেন আবুল কাহের চৌধুরী। তাই আরিফুলের প্রার্থিতায় দলে নানা আলোচনা ও উত্তেজনা তৈরি করেছে।
বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের নেতৃত্বস্থানীয় একাধিক নেতা বলেন, আরিফুল প্রার্থী হয়েই সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এরপরই সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যায়। তাঁর জয়ের পাল্লা ক্রমে ভারী হতে থাকে। তবে কোনো কারণ ছাড়াই এক দিন আগে সম্মেলন স্থগিত করায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মুক্তাদির আর আরিফুলের দ্বন্দ্বের জের ধরেই সম্মেলন স্থগিত হয়েছে।
সিলেট জেলা বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে জানা গেছে, জেলার ১৮টি সাংগঠনিক ইউনিটের ১ হাজার ৮১৮ জন কাউন্সিলর সম্মেলনে সরাসরি ভোট দিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করার কথা ছিল। সম্মেলনে সভাপতি পদে তিনজন, সাধারণ সম্পাদক পদে ছয়জন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চারজন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদের এক নেতার ফরম বাতিল করা হয়।