হাসান হুসাইনের জান্নাতি পোশাক দেখে হযরত ফাতিমা রাঃ কান্নাই ভেঙ্গে পরলেন

যেভাবে জান্নাত থেকে নেমে এসেছিল হযরত হাসান এবং হোসাইন রাদিয়াল্লাহু তাড়ানোর জন্য বিশেষ ঈদের জান্নাতি পোশাক। ঈদের দিন সকাল বেলা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ফজরের নামাজ আদায় করে কোথায় যেন চলে গিয়েছেন।

হাসান হুসাইনের জান্নাতি পোশাক দেখে হযরত ফাতিমা রাঃ কান্নাই ভেঙ্গে পরলেন

তার কোন খবরই পাওয়া যাচ্ছেনা ঘরের মধ্যে শুধুই নবীর দুলালী হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা হাতের কাজ করছিলেন আর পবিত্র মুখে আল্লাহ তাআলার নাম যুক্ত ছিলেন। হযরত হাসান এবং হুসাইন ঘরের বাইরে বসে খেলাধুলা করছে একমাত্র তারা দুই ভাই পুরাতন পোশাক পড়ে প্রতিদিনের মত আজও বাড়ির আঙিনায় খেলাধুলা করছে হঠাৎ করে একটি ছেলে দৌড়ে এসে বললো এই যে ভাই তোমাদের কি জামা নেই।

হাসান হুসাইনের জান্নাতি পোশাক দেখে হযরত ফাতিমা রাঃ কান্নাই ভেঙ্গে পরলেন

আজকে ঈদের দিন আনন্দের দিন আমরাই মহল্লায় ছেলেমেয়েরাই নতুন পোশাকে সজ্জিত হয়েছি আর তোমরা প্রতিদিনের মত আজও সেই পুরাতন কাপড় পড়ে খেলাধুলা করছো ছোট্ট ছেলে হযরত ইমাম হাসান এবং হোসাইন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা এতসব কিছু তাদের বোঝার বয়স তখন হয়নি যার কারণে তারা নিজের পিতা মাতার অবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতো না।

হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর ইন্তেকাল

হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা হাতে রুটি বানাচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কলিজার টুকরা হাসান এবং হোসেন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তাদের মা ফাতেমার কাছে ঈদের নতুন জামার জন্য কান্নাকাটি করছেন। মা ফাতেমার কাছে গিয়ে তার আবদার করে বলছেন আজকে তো ঈদের দিন আশেপাশের সমবয়সী অনেকেই নতুন জামা পড়ে মজা করছে কিন্তু আমাদের নতুন জামা নেই কেন মা ফাতেমা কান্না গোপন করে তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন।

তাদেরকে বললেন তোমরা গোসল করে এসো আমি তোমাদের নতুন জামার ব্যবস্থা করছি সত্যি আদরের ইমাম হাসান ইমাম হুসাইন তারা মনে মনে ভাবলেন গোসল দেয়ার সময় এর মধ্যেই তাদের জামা অবশ্যই তৈরি হয়ে যাবে যার কারণে মনের খুশিতে ইমাম হাসান এবং হুসাইন তারা গোসল করতে চলে গেলেন এদিকে হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা মনের মধ্যে দুশ্চিন্তা আবারো জেগে উঠলো তিনি মনে মনে ভাবছেন।

হযরত ফাতেমা রাঃ এর বিবাহ

এইবার কিভাবে পুত্রদেরকে সান্তনা দেবেন এইভাবে কতবার তাদেরকে ভুলিয়ে রাখা যায় গোসল করে এসে নতুন জামার না পেলে তো তারা রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দেবে এইসব চিন্তা ভাবনা করে। হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। হযরত হাসান এবং হোসেনের ঘরে ফেরার সময় হয়েছে।

এই মনে করে ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে অজু করে জায়নামাজে বসে গেলেন এবং রাহমানুর রাহিম আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মনের চাপা দুঃখগুলোকে প্রকাশ করলেন। হে পরম করুণাময় তুমি আমার সৃষ্টিকর্তা তুমি আমার সকল সমস্যার সমাধান কারী তাই তুমি তোমার এই অধম দাসের উপায় করে দাও ইমাম হাসান এবং হোসেনের মন থেকে নতুন জামার স্মৃতিকে মুছে ফেলো, নতুবা আদরের ছেলেরা গোসল করে যখনই আমার কাছে নতুন জামা চাইবে।

হাসান এবং হুসাইনরে জীবনী 

আমি কি করে ওদেরকে সান্ত্বনা দেব আমার প্রভু তুমি আজ তোমার এই দাস বিপদ থেকে মুক্ত করে দাও আমি আমার এই জীবনে আর কোনদিন এত বড় বিপদের মধ্যে পড়ে নি। এই মহা সমস্যা সমাধানে তুমি একটি উপায় বাতলে দাও তুমি কি চাও আজকে ঈদের দিনে তাদের সামনে আমি মিথ্যেবাদী সাব্যস্ত হয় এবং তার মিসকিনের মত ঈদ করুক রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নয়নের মনি হযরত ফাতিমা।

আবেগ জড়ানো ক্রন্দনরত প্রার্থনা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে গেল। আর কবুল হবেই বা না কেন আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন আমাকে কেউ একবার ডাকলে আমি তার ডাকে দশবার সারাতে যাইহোক হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা জায়নামাজে বসে সিজদায় পড়ে কাঁদছেন কিন্তু ঘরের বাইরে যে কি হচ্ছে সেদিকে তার কোনো নজরই নেই ওই দিকে তার ঘরের দরজায় একজন ব্যক্তি এসে আওয়াজ করছেন।

কারবালায় হুসায়ন এর শহীদের কাহিনী

আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা সেটা শুনতে পাচ্ছেন না তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তাআলা জিব্রাইল আলাই সাল্লাম কে দুটো জামা দিয়ে মা ফাতেমার ঘর। অবশেষে দরজায় নক করার শব্দ শুনে মা ফাতিমার সিজদা থেকে মাথা তুললেন এবং দর্জির কাজ থেকে জামা দুটো গ্রহণ করলেন নবী কন্যা হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তিনি প্রশাখাটি নিয়ে খুলে ফেললেন এজে বেহেশতী পোশাক।

হাসান হুসাইনের জান্নাতি পোশাক

একটি জামা ছিলো লাল, আরেকটি ছিল নিল। এবার নবী কন্যা হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তিনি বুঝতে পারলেন যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার প্রার্থনা কবুল করে ওনার বার্তাবাহক কে দিয়ে নতুন জামা পোশাক পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি সেই মুহূর্তেই সিজদায় পড়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করলেন এদিকে হযরত ইমাম হাসান ইমাম হোসাইন নতুন জামার প্রত্যাশায় গোসল করে এসে এরপরও।

হযরত ফাতেমা রাঃ এর মৃত্যু

ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা নিজের হাতেই পুত্র ইমাম হাসান এবং হোসাইনকে বৃষ্টি পোশাক পরিয়ে দিলেন তাঁরা নতুন পোশাক পড়ে মনের আনন্দে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরের দিকে তারা দৌড়াতে লাগলেন তারা চিৎকার দিয়ে বললেন না না এই দেখো আমাদের নতুন জামা।

রাসুলুল্লাহ সাঃ জামা দুটো দেখে কেঁদে উঠলেন যা পরবর্তী সময়ে হযরত হাসানের বিষপান নীল মৃত্যু এবং ইমাম হোসেনের কারবালা ময়দানের রক্তাক্ত ভাবে শাহাদাতের প্রতি ইঙ্গিত। সুপ্রিয় দর্শক এই ছিল আমাদের আজকের পোস্ট। পোস্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট  করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *